প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৪১ (রবিবার)
জোটের অপেক্ষায় জমিয়ত, নীরব সিলেটের ছোট দলগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক || সিলেট।। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সিলেটের রাজনীতিতে বড় দুই দলের প্রস্তুতি যখন শেষ পর্যায়ে, তখন ছোট ও মধ্যমসারির দলগুলো এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে। ইসলামী ঘরানার প্রভাবশালী দল জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বিএনপির সঙ্গে জোটে অংশ নেবে কি না—তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে দলটি ইতোমধ্যেই সিলেটের ছয়টি আসনে নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আবারও রাজনৈতিকভাবে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।

 

জমিয়তের সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও পূর্ণ সমঝোতা হয়নি। তবুও দলটি সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।

 

সম্ভাব্য প্রার্থীরা:

???? সিলেট-১ (সদর-মহানগর): মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী

???? সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর): হাফিজ হোসাইন আহমদ

???? সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ): মাওলানা নজরুল ইসলাম

???? সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ): অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী

???? সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ): মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক

???? সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার): শিল্পপতি হাফিজ ফখরুল ইসলাম

 

জমিয়তের সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর জামায়াতের কিছু কর্মকাণ্ডে তাদের জনসমর্থন কমেছে, বিপরীতে জমিয়তের প্রতি সমর্থন বেড়েছে। আমরা ছয় আসনে প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছি, তবে জোট হলে সেটি পরিবর্তন হতে পারে। কোনোভাবেই জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়।

 

বিএনপি ও জমিয়তের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, সিলেট-৫ আসনকে ঘিরে দুই দলের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

 

দলীয় বিভাজনের পর সিলেটেও সাংগঠনিক দুর্বলতায় ভুগছে জাতীয় পার্টি।

জাপা (রওশন)–এর কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জেলা আহ্বায়ক ইশরাকুল হোসেন শামীম বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। চাঁদাবাজি–রাহাজানি বন্ধ না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়।”

 

অন্যদিকে জাপা (কাদের)–এর কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আহ্বায়ক শাব্বির আহমদ বলেন, “সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। সরকার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি, পারবেও না বলে মনে হয়। আমরা সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

 

প্রাথমিকভাবে সক্রিয় থাকলেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

দলটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এহতেশাম হক বলেন, আমরা ক্ষমতামুখী নই। জনগণ, সংগঠন, নির্বাচন—এরপরই আসে ক্ষমতা। আমরা বসে নেই; সিলেট বিভাগের চার জেলায় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ৯০০ আবেদন পেয়েছি।

 

দলটির অন্যান্য নেতারা জানান, এনসিপি এখন সাংগঠনিক ভিত্তি শক্ত করাতেই মনোযোগ দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইসলামী দলগুলোর বিশেষ করে জমিয়তের জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত সিলেটের স্থানীয় ভোটের সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে জাপা ও এনসিপির নীরবতা ইঙ্গিত দিচ্ছে—তারা আপাতত নির্বাচনী লড়াই নয়, বরং সাংগঠনিক পুনর্গঠনে ব্যস্ত।

 

বার্তা সিলেট ডটকম / ইকবাল