সংগ্রহীত
স্টাফ রিপোর্টার।। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে সরকারি ঘর পেয়েও সেখানে থাকছেন না অন্তত ১০টি পরিবার। এর মধ্যে দুজন রয়েছেন বিদেশে—ওমানে অবস্থান করেও তারা সরকারি ঘরের বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ আবার ঘর অন্যদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন, কেউ বা তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন বছরের পর বছর।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ২০২৩ সালে বনগাঁও এলাকায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ৫৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়। তবে অনেক ঘরেই বসবাসের কোনো চিহ্ন নেই। ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে, কিছু ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত।
স্থানীয়রা জানান, ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর কিছুদিন মালামাল নিয়ে থাকলেও পরে অধিকাংশ পরিবার রসুলগঞ্জ বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে চলে গেছে। কেউ কেউ ঘর অন্যদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বা খালি রেখে দিয়েছেন।
স্থানীয় ফিরুজ আলী বলেন, ৬-৭টি পরিবার ঘর পাওয়ার পর কয়েকদিন ছিল, তারপর মালপত্র নিয়ে চলে গেছে। এখন তারা বাজারে ভাড়া বাসায় থাকে।
সরকারি তালিকা অনুযায়ী, ১৪ নম্বর ঘরের মালিক নুর মোহাম্মদ ও ১৮ নম্বর ঘরের মালিক দুজনই ওমানে রয়েছেন। এ ছাড়া ৪ নম্বর ঘরের বরাদ্দপ্রাপ্ত নেছার আলী, ১৭ নম্বর ঘরের শিবলী বেগমসহ ১৯টি ঘরের বরাদ্দপ্রাপ্ত কেউ বর্তমানে সেখানে থাকেন না।
বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রুমন রবিদাস বলেন, আমি নতুন ঘরে উঠেছি। তবে ঘরের দরজায় তালার সমস্যা, জানালাও ঠিকমতো বন্ধ হয় না। বাথরুমের দরজায় ফাটল আছে। আমার বাবা জামাল আহমেদও এখানে ২৭ নম্বর ঘর পেয়েছেন, কিন্তু তিনি থাকেন না—অন্য লোককে জায়গা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শিমুল আমীন বলেন, যারা ঘর পেয়ে থাকেন না, তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে বরাদ্দ বাতিল করে যোগ্য পরিবারকে ঘর দেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহসীন উদ্দিন জানান, তিনি নতুন করে তালিকা করছেন।
যারা ঘরে থাকেন না, তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের বরাদ্দ দেওয়া হবে,” বলেন তিনি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ বলেন, বিদেশে থেকেও যারা ঘর পেয়েছেন বা ঘরে থাকেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আগামী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর না দিয়ে প্রভাবশালী বা বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়েছেন।
বার্তা সিলেট ডটকম / ইকবাল
সিলেট থেকে আরো পড়ুন
