বাবুলের খপ্পরে পড়ে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব।
স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জের বাবুলের অপকর্মের শেষ নেই। তার খপ্পরে পড়ে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব। ইউরোপে পাড়ি দেয়ানোর নামে সমুদ্রে আটকা পড়ে অনেক তরুণ প্রাণ হারানোসহ বিড়ম্বনার শিকার হচচ্ছে। জানাগেছে, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের হরিধরপুর গ্রামের আব্দুল মালিক মিয়ার পুত্র বাবুল আহমদ।বাংলাদেশে ‘আবুন্নুর’ নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তবে তার অতীত ঘিরে স্থানীয়ভাবে নানা বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাবুল বর্তমানে মানবপাচারের অন্যতম গডফাদার হিসেবে পরিচিত। তার প্রভাবে এলাকার শতাধিক তরুণ ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। কেউ হারিয়েছেন জীবন, কেউ আটকা পড়েছেন মরুভূমি বা সমুদ্রে। ভূক্তভোগী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে চলছে কান্না আর আহাজারি। বিপরীতে বাবুল গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়। স্থানীয় সূত্রে জানায়, ২০০৮ সালে নিজ এলাকায় গরু চুরির ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসে বাবুল। ওই সময় স্থানীয়রা তাকে ধরে বাউসা ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে যায়। ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তার বিচার অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি দেয়া হয় এবং লিখিতভাবে স্ট্যাম্পে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। ঘটনার পর লজ্জায় বাবুল দেশত্যাগ করে লিবিয়া হয়ে ইরান পাড়ি জমায়। পরে সেখান থেকে গ্রিসে পৌঁছে রাজধানী এথেন্সে গাড়ি মেরামতের কাজ শুরু করে। গ্রিসে কিছুদিন পরই চুরির অভিযোগে চাকরি হারায় বাবুল। এরপর মানলদা এলাকায় এক বাংলাদেশির কৃষি ফার্মে কাজ নেয়। কিন্তু সেখানে শ্রমিকদের বেতন আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা তাকে গণপিটুনি দিলে তাকে ওই ফার্ম থেকে বহিষ্কার করে। গ্রিস থেকে ইতালি হয়ে পর্তুগালে চলে যায়। সেখানে এসে নিজের পরিচয় পরিবর্তন করে ‘বাবুল আহমেদ’ নাম ব্যবহার শুরু করে। এথেন্সে তিনি “কুকন” এবং মানলদায় “আলমগীর” নামে পরিচিত । লিসবনের গুজাখাইর গ্রামের প্রবাসী মহসিন মিয়ার মাধ্যমে তিনি একটি কৃষি ফার্মে চাকরি নেন। কিছুদিনের মধ্যেই কৌশলে মহসিন মিয়ার সঙ্গে প্রতারণা করে ফার্মের মালিকের আস্থাভাজন হয়ে ওঠে বাবুল। পরবর্তীতে মহসিন মিয়াকে সরিয়ে নিজেই ফার্মের সুপারভাইজার পদে বসেন। লিসবনের স্থানীয় প্রবাসীরা জানান, বাবুল বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে অবস্থান করে প্রতারণার মাধ্যমে সুযোগ নিয়েছে। বর্তমানে তিনি পর্তুগালের ফরো কুয়ারতেরা শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে বলে জানা গেছে।
সিলেট থেকে আরো পড়ুন
