সিলেট

শ্রীমঙ্গলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পুনরুত্থান, জনমনে উদ্বেগ

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ০০:১৭

বার্তা সিলেট ডেস্ক : 

বার্তা সিলেট ডেস্ক :   মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে হঠাৎ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নামে পোস্টার ও ব্যানার সাঁটানোর ঘটনায় শহর এলাকায়  শঙ্কা ও চাঞ্চল্যতা দেখা দিয়েছে। পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে   এ ঘটনা ঘটে।  এনিয়ে  প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শহরের স্কুল ও কলেজ ফটক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম, বাজার এলাকা, বিদ্যুতের খুঁটি এবং ক্লিনিকের দেয়ালগুলোতে শেখ হাসিনার ছবি ও শুভেচ্ছা বার্তা সংবলিত পোস্টার টানানো হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের নামে পোস্টারে লেখা আছে: বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পুনঃপ্রত্যাবর্তন, বাংলাদেশের পুনর্জাগরণ, বাংলা ও বাঙালির নয়নমণি। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর শুভ জন্মদিন। শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, গত এক বছর ধরে এই সংগঠনের কোনো পোস্টার চোখে পড়েনি। হঠাৎ শহর জুড়ে পোস্টার, সাটানোর ঘটনায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১টা থেকে ভোর পর্যন্ত দলবদ্ধভাবে কয়েকটি মোটরসাইকেল শহর ও মফস্বল এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যুবকরা মুখ ঢেকে চলাচল করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ‘কারা লাগিয়েছে, তা শনাক্তের কাজ চলছে। এক সাবেক ছাত্রনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটি টেস্ট রান। মাঠ গরম করা যাবে কিনা, সেটা দেখা হচ্ছে। ডিবি সূত্র জানায়, অন্তত তিনটি দল ঘটনার উৎস শনাক্ত ও অর্থায়নের উৎস খুঁজছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়ের ছাপ থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পলাতক এমপি, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা, জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে সরাসরি অর্থায়ন করছেন। এমনকি গোপনে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে অস্থিরতা তৈরি করার ছক আঁকা হচ্ছে। ফেসবুকে স্থানীয় সাংবাদিক ও ছাত্রনেতারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মুজাহিদুল ইসলাম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ শ্রীমঙ্গল প্রশাসনকে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করুন। সঙ্গে সঙ্গে আরও ধন্যবাদ আমাদের দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্যাতিত দলকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে সহযোগিতা করার জন্য। নিষিদ্ধ সংগঠন গুপ্তলীগের কার্যক্রম কীভাবে চালাচ্ছে? প্রশাসন কি করছে শ্রীমঙ্গলের ছাত্র-জনতা জানতে চায়?’ সাংবাদিক শাহজাহান আহমেদ তার স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন, ‘শ্রীমঙ্গলে ছাত্রলীগের প্রচার প্রচারণা, প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ। চায়ের দোকান, বাজার ও সামাজিক আড্ডায় এখন আলোচনার মূল বিষয়, নতুন করে দখল রাজনীতি কি শুরু হবে? নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন সক্রিয় হলে ছাত্র-জনতা কি করবে?’ সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এটি প্রশাসনের জন্য লিটমাস টেস্ট। তারা ব্যবস্থা নেয় কিনা- তাহলেই বোঝা যাবে। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন কলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সিলেট থেকে আরো পড়ুন