সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মৌলা এলাকার অস্থায়ী কাঠের সেতুটি এখন যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ওই সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন জয়নাল আবেদীন (৪০)। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্যামারগাঁও গ্রামের রইছ আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জয়নাল তার ছোট ভাই আয়নাল মিয়াকে মোটরসাইকেলে নিয়ে ছাতকে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। মৌলা এলাকার অস্থায়ী কাঠের সেতুটি পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজনই নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নালকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আয়নাল বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে মৌলার পুরনো পাকা সেতুটি ভেঙে পড়ায় চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে জরুরি বরাদ্দ হিসেবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হলেও তা নামমাত্র কাজে খরচ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। কাঠের তৈরি অস্থায়ী সেতুটি শুরু থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বাধ্য হয়ে দুই ইউনিয়নের শত শত মানুষ প্রতিদিন এই সেতু ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিন, আশ্রব আলী ও অটোরিকশাচালক বোরহান মিয়া বলেন, “প্রায় এক বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু স্থায়ী সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। এই মৃত্যুর দায় নেবে কে?”
অস্থায়ী সেতুর নির্মাতা তোফায়েল আহমদ বিপন বলেন, “আমি মাত্র ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। সেই সীমিত বাজেটে যতটা সম্ভব ভালোভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছি।”
নোয়ারাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আব্দুল খালিক পীর বলেন, “সেতু এলাকায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) রফিকুল ইসলাম জানান, “জোড়াপানি–নরসিংপুর সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।
বার্তা সিলেট ডটকম / ইকবাল
সিলেট থেকে আরো পড়ুন
